Showing posts with label রাজনীতি. Show all posts

ছয়জন প্রার্থী বাম থেকে খগেন মুর্মু, মহম্মদ সেলিম, ঈশা খান চৌধুরী, খলিলুর রহমান, আবু তাহের ও শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী
ছয়জন প্রার্থী বাম থেকে খগেন মুর্মু, মহম্মদ সেলিম, ঈশা খান চৌধুরী, খলিলুর রহমান, আবু তাহের ও শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী
ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

তৃতীয় দফা লোকসভা নির্বাচন হবে ৭ মে। প্রথম দুটি পর্বে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছিল দ্বিমুখী। আর এবার হচ্ছে ত্রিমুখী লড়াই।

তৃতীয় পর্বে পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনের মধ্যে ৪টিতে নির্বাচন হবে। এই চার আসনকে কংগ্রেসের ঘাঁটি হিসেবে ধরা হয়। তবে এখন এসব আসনে কংগ্রেসের প্রভাব অনেকটা কমে এসেছে। কংগ্রেসের ঘাঁটিতে লড়াই হচ্ছে ত্রিমুখী। প্রার্থী চার দল ও অন্যান্য দল এবং স্বতন্ত্র মিলিয়ে ৫৭ জন। লড়াই হবে তিন দল ও জোটের। একদিকে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি, অন্যদিকে কংগ্রেস-বাম দলের জোট।

লড়াইয়ের ক্ষেত্র তিনটি হলো উত্তর মালদা, দক্ষিণ মালদা, মুর্শিদাবাদ ও জঙ্গিপুর আসন। এ চার আসনের এলাকা মূলত একসময়ের কংগ্রেস–প্রভাবিত। মালদহের কংগ্রেস নেতা গণি খান চৌধুরী ছিলেন এখানকার এক নামী নেতা ও কিংবদন্তি। রেলমন্ত্রী থাকাকালে তিনিই কলকাতায় এনেছিলেন পাতালরেল। দিয়েছিলেন বহু বেকারের চাকরি।

অন্যদিকে আরেকটি ইতিহাসখ্যাত আসন হলো মুর্শিদাবাদ। বাংলার এককালের রাজধানী। নবাব সিরাজের স্মৃতিবাহী। সেই আসনেও এবার লড়াই জোরদার হবে। তৃণমূল বিজেপি ছাড়া এ আসনে এবার লড়ছেন সিপিএম নেতা, সাবেক সংসদ সদস্য ও সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি লড়ছেন কংগ্রেস-বাম দলের জোটের প্রার্থী হয়ে।

এই কংগ্রেস গড়ের উত্তর মালদা আসনে এবার লড়ছেন তৃণমূলের প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নবাগত। সাবেক আইপিএস পুলিশ কর্মকর্তা। কংগ্রেসের হয়ে লড়ছেন মোস্তাক আলম, আর বিজেপির প্রার্থী হয়ে লড়ছেন বিদায়ী সংসদ সদস্য খগেন মুর্মু।
দক্ষিণ মালদায় লড়ছেন তৃণমূলের শাহনেওয়াজ আলী রায়হান, কংগ্রেসের ঈশা খান চৌধুরী। গণি খান চৌধুরীর বংশধর ঈশা খান। এই আসনের বিদায়ী সংসদ সদস্য হলেন ঈশা খানের বাবা আবু হাসেম খান চৌধুরী। বিজেপির প্রার্থী হয়ে লড়ছেন শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী।

মুর্শিদাবাদে লড়ছেন তৃণমূলের আবু তাহের খান, বিজেপির গৌরী শঙ্কর ঘোষ এবং সিপিএমের মহম্মদ সেলিম। সেলিম লড়ছেন কংগ্রেস-বাম দলের জোট প্রার্থী হিসেবে। আর জঙ্গিপুর আসনে লড়ছেন তৃণমূলের বিদায়ী সংসদ সদস্য খলিলুর রহমান, বিজেপির ধনঞ্জয় ঘোষ আর কংগ্রেসের মুর্তজা হোসেন। ফলে এই চার আসনে লড়াই হচ্ছে মূলত ত্রিমুখী। তৃণমূল, বিজেপি ও কংগ্রেস-বাম জোট প্রার্থীদের মধ্যে। গত নির্বাচনে এই চার আসনের মধ্যে দুই আসনে জিতেছিল তৃণমূল, একটি করে আসনে জিতেছিল কংগ্রেস ও বিজেপি।

২০১৯ সালের নির্বাচনে এই চার আসনে জিতেছিলেন যথাক্রমে মালদহ উত্তর আসনে বিজেপির খগেন মুর্মু। পেয়েছিলেন ৫ লাখ ৯ হাজার ৫২৪ ভোট। হারিয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী মৌসম বেনজীর নূরকে। দক্ষিণ মালদহ আসনে জিতেছিলেন কংগ্রেসের আবু হাসেম খান চৌধুরী। পেয়েছিলেন ৪ লাখ ৪৪ হাজার ২৭০ ভোট। হারিয়ে দিয়েছিলেন বিজেপির প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরীকে। মুর্শিদাবাদ আসনে জিতেছিলেন তৃণমূলের আবু তাহের খান। পেয়েছিলেন ৬ লাখ ৪ হাজার ৩৪৬ ভোট। পরাজিত করেছিলেন কংগ্রেসের আবু হেনাকে। আর জঙ্গিপুর আসনে জিতেছিলেন তৃণমূল প্রার্থী খলিলুর রহমান। পেয়েছিলেন ৫ লাখ ৬২ হাজার ৮৩৮ ভোট। প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিজেপির নারী প্রার্থী মাহফুজা খাতুন ।

এবার এই চার আসনে মূলত লড়াই হবে ত্রিমুখী। তৃণমূল, বিজেপি এবং কংগ্রেস-বাম জোট প্রার্থীদের মধ্যে। তবে এবার মুর্শিদাবাদ আসনে কংগ্রেস-বাম জোটের প্রার্থী মহম্মদ সেলিম জোর লড়াইয়ে থাকছেন। যদিও এই ৪ আসনের ওপর এবিপি আনন্দ ও সি-ভোটার সাম্প্রতিক এক জনমত সমীক্ষায় বলেছে, মালদহ উত্তরে খগেন মুর্মু, মালদহ দক্ষিণে ঈশা খান চৌধুরী, মুর্শিদাবাদে আবু তাহের এবং জঙ্গিপুরে খলিলুর রহমানের জয়ের সম্ভাবনা। অর্থাৎ ২০১৯ সালের ফলাফলই পুনরাবৃত্তি হতে পারে বলে ওই সমীক্ষায় ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।

বিএনপি
বিএনপি

এবার উপজেলা পরিষদের দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচনে অংশ নেওয়া ৬১ জনকে একযোগে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। আজ শনিবার বিকেলে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে বহিষ্কৃত ব্যক্তিদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় গঠনতন্ত্র মোতাবেক বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পদ থেকে তাঁদের বহিষ্কার করা হয়েছে।

দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নামে এই বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়। বহিষ্কৃত নেতাদের মধ্যে ২৬ জন চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী। বাকি ৩৫ জনের মধ্যে ১৯ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে এবং ১৬ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী রয়েছেন।

বহিষ্কৃত যাঁরা

বিএনপির তালিকা অনুযায়ী, বহিষ্কৃত নেতারা হলেন পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার ময়দান দিঘী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি হাবিব আল আমিন, দেবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম, সৈয়দপুর (সাংগঠনিক জেলা) যুগ্ম সম্পাদক রিয়াদ আরফান সরকার, দিনাজপুর জেলা বিএনপির সদস্য রিয়াজুল ইসলাম, নাটোরের লালপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ভিপি আরিফ, বাঘাতিপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর হোসেন, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি জুলফিকার আলী, দিঘলিয়ায় খুলনা জেলা বিএনপির সাবেক সহশ্রমবিষয়ক সম্পাদক মো. এনামুল হক, খুলনা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাব্বির আহমেদ, বরগুনা সদরে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল হালিম, মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল মান্নান, মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য খন্দকার লেয়াকত হোসেন, টাঙ্গাইলের ভুয়াপুর উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলায় যুবদলের কেন্দ্রীয় সদস্য মাহবুবুর রহমান, ময়মনসিংহ সদর থানা কৃষক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক হোসাইন নূর মোহাম্মদ আনির, নকলায় শেরপুর জেলা বিএনপির সদস্য মোকসেদুল হক, ধর্মপাশায় উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম চৌধুরী, তাহিরপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি আবুল কাশেম, বিশ্বম্ভরপুরে উপজেলা বিএনপির সদস্য হারুনুর রশিদ ও সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা মোহন মিয়া, জামালগঞ্জে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নুরুল হক আফিন্দি, গোয়াইনঘাটে সিলেট জেলা বিএনপির কোষাধ্যক্ষ শাহ আলম, হবিগঞ্জে নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মজিবুর রহমান, কক্সবাজারের পেকুয়ায় উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি শাফায়েত আজিজ, বান্দরবানের লামায় উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি জাকের হোসেন মজুমদার ও চাঁদপুরে হাজীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সুফিয়ান।

দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠেয় ১৫৯টি উপজেলায় বিএনপির এই ২৬ জন চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তের পর তাঁদের নির্বাচন থেকে ফেরানোর নানা চেষ্টা করা হয়। এ লক্ষ্যে প্রার্থীদের কাছে স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্তের একটি চিঠি পাঠানো হয়। পাশাপাশি দলের কেন্দ্রীয়, বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতাদের বিশেষভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয় নির্বাচনে অংশ নেওয়া নেতাদের বোঝানোর জন্য। সব উপেক্ষা করেই তাঁরা নির্বাচনে নেমেছেন।

বিএনপির নেতা রুহুল কবির রিজভী প্রথম আলোকে বলেন, ‘দল করতে হলে দলের শৃঙ্খলা মানতে হবে। দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন করবে না। সেখানে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া মানে এই অবৈধ সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়া। দলের চেয়ে নির্বাচনই যদি বড় হয়, তাহলে তো তাঁদের আগে পদত্যাগ করা উচিত। আপনি দল করবেন, আবার দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না, এটা হতে পারে না।’

জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের স্থায়ী পর্যবেক্ষক রিয়াদ মনসুর ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ (ডানে) বৈঠক করেন
জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের স্থায়ী পর্যবেক্ষক রিয়াদ মনসুর ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ (ডানে) বৈঠক করেনছবি: পিআইডি

আন্তর্জাতিক ফোরামে ফিলিস্তিনের প্রতি বাংলাদেশের সমর্থন অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের স্থায়ী পর্যবেক্ষক রিয়াদ মনসুর। গতকাল শুক্রবার গাম্বিয়ায় স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে তিনি এ অনুরোধ জানান।

আজ শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ওআইসির ১৫তম শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। গতকাল ছিল সম্মেলনের প্রাক্‌-প্রস্তুতিমূলক পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সভা। সেই সভার ফাঁকে রিয়াদ মনসুরের সঙ্গে বৈঠকটি হয়।

বৈঠকে রিয়াদ মনসুর ফিলিস্তিনের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেন এবং আন্তর্জাতিক ফোরামে ফিলিস্তিনের প্রতি বাংলাদেশের সমর্থন অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানান। জবাবে হাছান মাহমুদ ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থনের কথা তাঁকে অবহিত করেন।

ফিলিস্তিনি সাধারণ জনগণের ওপর ইসরায়েলি আগ্রাসন স্থায়ীভাবে নিরসনের লক্ষ্যে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ওআইসির সদস্যদেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন হাছান মাহমুদ।

বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন, সৌদি আরবে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ও ওআইসিতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, গাম্বিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত নাইজেরিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাসুদুর রহমান এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহ অনুবিভাগের মহাপরিচালক ওয়াহিদা আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে আজ শনিবার দুপুরে আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন মির্জা আব্বাস
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে আজ শনিবার দুপুরে আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন মির্জা আব্বাসছবি: প্রথম আলো

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না দেওয়াকে আরেকটা ফাঁদ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। বর্তমান সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ফাঁদ পেতেছিলেন, বিএনপিকে নির্বাচনে নেবেন। কিন্তু বিএনপি নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে। যে নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারবে না, সেই নির্বাচনের প্রয়োজন বাংলাদেশে নেই।’

আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে মির্জা আব্বাস এসব কথা বলেন। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশীদের মুক্তির দাবিতে এ কর্মসূচি আয়োজন করে হাবিবুর রশীদ মুক্তি পরিষদ।

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের উদ্দেশে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘একনায়কতন্ত্র কায়েম করতে পারেন, রাজতন্ত্র ঘোষণা দিতে পারেন, কিন্তু নির্বাচনের কথা আপনাদের মুখে মানায় না। ৭ জানুয়ারি কি লোকজন ভোট দিতে গিয়েছিল? এবারও (উপজেলা নির্বাচনে) যাবে না।’

উপজেলা নির্বাচনে নিজেরাই নিজেদের প্রার্থীদের দাঁড়াতে দিচ্ছে না এমন কয়েকটি ঘটনার উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বিএনপি দাঁড়ালে কী অবস্থা হতো! আমাদের সিদ্ধান্ত সঠিক আছে, সঠিক থাকবে।’

বর্তমানে ‘স্বৈরশাসন’ চলছে অভিযোগ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘জনরোষের মুখে একদিন না একদিন এই সরকারের পতন ঘটবেই। এটা কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। গ্রেপ্তার করে বিশ্বে কোনো আন্দোলন থামানো গেছে বলে জানা নেই।’

বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতা আরও বলেন, ‘আমরা আন্দোলন করছি, আন্দোলন হবে, মুক্ত হবে দেশ—আমি দেখতে পারব কি না, জানি না। কিন্তু কেউ না কেউ আসবে দেশকে মুক্ত করার জন্য। আমাদের নেতা তারেক রহমান একদিন দেশে ফেরত আসবেন। জনরোষের মুখে এই সরকারের যখন পতন হবে, তখন তিনি দেশে ফেরত আসবেন, নেতৃত্ব দেবেন দেশকে।’


আজ দেশের ‘করুণ অবস্থা’ সম্পর্কে আওয়ামী লীগ ছাড়া সবাই জানে বলে মনে করেন মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, সবচেয়ে বেশি জানেন বিএনপির নেতা–কর্মীরা। তাঁর বাসায় প্রতিদিন কমবেশি ৫০–১০০ জন আসেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কেউ বলে আমার বাবা জেলে, কেউ বলে সন্তান জেলে, কেউ বলে ভাই জেলে, কেউ বলে স্বামী জেলে।’

খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য ‘যুদ্ধ করতে করতে মৃত্যুর পথে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন’ বলে মনে করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, ‘তাঁকে মুক্তি দিয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে বলেছি। তাঁর অবস্থা ভালো নয়। তাঁরা (ক্ষমতাসীন দলের নেতারা) বলেন আইন নেই। আইন থাকবে না কেন? রাশেদ খান মেননকে বিদেশে পাঠানো হয় নাই? আ স ম আবদুর রবকে বিদেশে পাঠানো হয় নাই? আ স ম রবকে বন্দী অবস্থায় বিদেশে পাঠানো হয়েছিল।’


খালেদা জিয়া দেশের সর্বনাশ করে গেছেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তা ঠিকঠাক করছেন—ক্ষমতাসীন দলের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘কী ঠিক করছেন, জানা নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের দিকে নজর দেন, টাকাপয়সা নাই।

কয়েকজন লোকের দিকে নজর দেন, পেট বড় হয়ে গেছে। হাজার হাজার, লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে। ওই উন্নয়ন চুরির উন্নয়ন, দেশের মানুষ মেনে নেবে না।’
সরকারকে উৎখাত করা নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বক্তব্যের বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘আমরা তো সরকার দেখি না। এই সরকারকে উৎখাত করা বা রাখার দায়দায়িত্ব বিএনপি বহন করে না। জনগণ যখন মনে করবে, তখন লাঠি দিয়ে এই সরকারকে ফেলে দেবে।’

কর্মসূচিতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দলের নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ একসাথে চালাতে হবে। না হলে হাবিবুর রশীদের মতো অনেককে জেলে যেতে হবে। সুশাসন, আইনের শাসন, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে সর্বশেষ লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্যসচিব রফিকুল আলম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েম মুন্না প্রমুখ।

[random][fbig2][#e74c3c]
Powered by Blogger.