Showing posts with label বাংলাদেশ. Show all posts

Sakib May 06, 2024

 

বিকাশ ক্যাশ আউটের সুবিধা বেড়ে ডাবল

বিকাশ ক্যাশ আউটের সুবিধা বেড়ে ডাবল

হাজারে ১৪.৯০ টাকায়, ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত ক্যাশ আউট করুন ২টি প্রিয় এজেন্ট নাম্বার থেকে! বিকাশ-এ এখন কম খরচে ক্যাশ আউটের সুবিধা ডাবল! এখন একটি ক্যালেন্ডার মাসে একজন গ্রাহক যেকোনো ২টি এজেন্ট নাম্বারকে প্রিয় এজেন্ট নাম্বার হিসেবে সেট করতে পারবেন আর ক্যাশ আউট করতে পারবেন ১.৪৯% চার্জে প্রতি মাসে, ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত!

  • একজন গ্রাহক এক ক্যালেন্ডার মাসে ক্যাশ আউটের জন্য প্রিয় এজেন্ট নাম্বার হিসেবে যেকোনো ২টি বিকাশ এজেন্ট নাম্বার বেছে নিতে পারবেন এবং একজন গ্রাহকের যেকোনো মুহূর্তে সর্বোচ্চ ২টি প্রিয় এজেন্ট নাম্বার থাকতে পারে।
  • গ্রাহক প্রিয় এজেন্ট নাম্বার থেকে ১.৪৯% চার্জে ক্যাশ আউট করতে পারবেন।
  • ১.৪৯% ক্যাশ আউট চার্জ একটি ক্যালেন্ডার মাসে ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত প্রযোজ্য।
  • ২টি প্রিয় এজেন্ট নাম্বারই যদি প্রথমবার যোগ করা হয়, সেক্ষেত্রে গ্রাহকরা উক্ত ক্যালেন্ডার মাসের মধ্যে কোনো প্রিয় এজেন্ট নাম্বার পরিবর্তন করতে পারবেন না। পরবর্তী ক্যালেন্ডার মাস থেকে, গ্রাহক প্রথমে সেভ করা প্রিয় এজেন্ট নাম্বার বাদ দিয়ে প্রতি মাসে ২টি প্রিয় এজেন্ট নাম্বার পরিবর্তন করতে পারবেন।তবে, যদি ইতোমধ্যে ১টি প্রিয় এজেন্ট নাম্বার যোগ করা থাকে, তবে গ্রাহক যেকোন ক্যালেন্ডার মাসে আরও একটি যোগ করতে এবং পূর্বেরটি পরিবর্তন করতে পারবেন।
  • গ্রাহক *247# এবং বিকাশ অ্যাপ উভয়ের মাধ্যমে প্রিয় এজেন্ট নাম্বার যোগ/বাদ দিতে পারবেন
  • গ্রাহক *247# এবং বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে প্রিয় এজেন্ট নাম্বার চেক করতে পারবেন
  • গ্রাহক *247# এবং বিকাশ অ্যাপ উভয়ের মাধ্যমে ১.৪৯% ক্যাশ আউট চার্জের জন্য প্রযোজ্য লিমিট বা অবশিষ্ট পরিমাণ দেখতে পারবেন
  • যদি কোনো ক্যাশ আউট লেনদেন ৫০,০০০ টাকার লিমিট অতিক্রম করে, তাহলে সেই লেনদেনের পরিমাণের জন্য ১.৮৫% ক্যাশ আউট চার্জ প্রযোজ্য হবে এবং প্রিয় এজেন্ট ক্যাশ আউট লিমিট ব্যবহার হয়ে যাবে।

উদাহরণ: একজন গ্রাহক ইতোমধ্যে এক মাসে তার প্রিয় এজেন্ট নাম্বার থেকে ৪৯,৫০০ টাকার ক্যাশ আউট লেনদেন করেছেন। এখন, তিনি যদি প্রিয় এজেন্ট নাম্বার থেকে ৬০০ টাকা (মোট ৫০,১০০ টাকা) ক্যাশ আউট করতে চান, তাহলে ১.৮৫% ক্যাশ আউট চার্জ প্রযোজ্য হবে এবং প্রিয় এজেন্ট ক্যাশ আউট লিমিট খরচ হবে।

কম খরচে ক্যাশ আউট করার সহজ নিয়মঃ
প্রিয় এজেন্ট নাম্বার সেট করুন;
ক্যাশ আউট করার আগে প্রিয় এজেন্ট নাম্বারে লিমিটের কত বাকি আছে তা দেখে নিন;
প্রিয় এজেন্ট নাম্বারে লিমিটের বাকি অংশ আগে ক্যাশ আউট করে নিন।

প্রিয় নাম্বার ছাড়া অন্য যেকোনো এজেন্ট নাম্বার থেকে ক্যাশ আউট
প্রিয় এজেন্ট নাম্বার ছাড়া যেকোনো এজেন্ট নাম্বার থেকে অ্যাপ এবং *247# ডায়াল করে উভয় মাধ্যমে ক্যাশ আউটের ক্ষেত্রে ১.৮৫% চার্জ প্রযোজ্য হবে।
অ্যাপ এবং *247# ডায়াল করে উভয় চ্যানেলের জন্য প্রযোজ্য।

Sakib May 06, 2024
কেন্দুয়ায় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

প্রাইম ডিজিটাল ইনস্টিটিউটে (বিএম কলেজ)। ছবি: সংগৃহিত

 

নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার রামপুর বাজার সংলগ্ন প্রাইম ডিজিটাল ইনস্টিটিউটে (বিএম কলেজ) আয়াপদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ মুছলেহার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী স্থানীয় রামনগর গ্রামের আব্দুল মজিদের স্ত্রী আয়শা খাতুন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগের বরাতে জানা গেছে, ২০১৪ সালে আয়শা খাতুনকে আয়াপদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে কাজে যোগদান করান প্রাইম ডিজিটাল ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মুছলেহা। একপর্যায়ে নিয়োগ সম্পন্ন করার কথা বলে অধ্যক্ষ  আয়শা খাতুনের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি নেন এবং এক লাখ টাকা দাবি করেন। পরে তিনি ধারদেনা করে অধ্যক্ষকে ৬০ হাজার টাকা দেন এবং বাকী টাকা কিছু দিন পরে দিবেন বললে অধ্যক্ষ তা মেনে নেন।

এদিকে গত ৬ মাস আগে হঠাৎ করে আয়শা খাতুনকে কাজে না আসার জন্য নিষেধ করেন অধ্যক্ষ মুছলেহা। নিষেধ করার কারণ জানতে চাইলে অধ্যক্ষ আয়শা খাতুনকে বলেন, বয়স বেশি হয়ে গেছে। তাই আয়াপদে নিয়োগ হবে না। এ সময় অধ্যক্ষ মুছলেহা তাকে দুশ্চিন্তা করতে নিষেধ করেন এবং তার ভবিষ্যত গড়ে দিবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু সম্প্রতি আয়শা খাতুন অধ্যক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে তিনি তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ দুর দুর করে তাড়িয়ে দেন।

আয়শা খাতুন বলেন, আমার কোনো সন্তানাদি নাই। স্বামী আরেক বিয়ে করে সংসার করছে। আমি বর্তমানে খুবই একা ও অসহায়। চাকরি পাওয়ার আশায় ৯ বছর বিনা বেতনে কাজ করেছি। ধারদেনা করে ৬০ হাজার টাকাও দিয়েছি। এখন তারা আমাকে হঠাৎ কলেজ থেকে বের করে দিয়েছে। অনেক টাকার বিনিময়ে আমার পরিবর্তে আরেকজনকে নিয়েও নিয়েছে। আমার সাথে অধ্যক্ষ মুছলেহা প্রতারণা করেছে। তাই আমি গত ২৭ মার্চ ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। ৯ বছর বিনা বেতনে কাজ করার ক্ষতিপূরণসহ আমি আমার ৬০ হাজার টাকা ফেরত চাই।

স্থানীয় বাসিন্দা শামছুল আলম তমাল ও আজিবুর রহমান বলেন, আমরা জানি আয়শা খাতুন দীর্ঘ বছর যাবত প্রাইম ডিজিটাল ইনস্টিটিউটে আয়াপদে চাকরি করেন। কিন্তু এখন শুনছি তাকে নাকি চাকরি না দিয়ে কলেজ থেকে বের করে দিয়েছে। বিষয়টা ঠিক হয়নি। এটা খুবই অমানবিক।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে অধ্যক্ষ মুছলেহা বলেন, আয়শা খাতুনের কাছ থেকে কোনো টাকা নেইনি এবং তার বয়স বেশি হওয়ায় আয়াপদে নিয়োগ হবে না- এটা আমি তাকে শুরুতেই বলেছি। তাকে যতদিন কাজ করিয়েছি, বিনিময়ে টাকাও দিয়েছি। তবুও তিনি আমার বিরুদ্ধে অহেতুক মিথ্যা অভিযোগ করছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ইমদাদুল হক তালুকদার বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে আমি নিজেই তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

Sakib May 06, 2024
কেন্দুয়ায় ১৪শ হাঁসের বাচ্চা মারল দুর্বৃত্তরা, Kendua.com

কেন্দুয়ায় ১৪শ হাঁসের বাচ্চা মারল দুর্বৃত্তরা

 

নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় রাতের আঁধারে বকুল মিয়া নামে এক খামারির ১৪০০ হাঁসের বাচ্চা মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে। শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালের দিকে উপজেলার পাইকুড়া ইউনিয়নের বাড়লা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

খামারী বকুল মিয়া বলেন, আমি রাতে হাঁসের সব বাচ্চাগুলোকে সুস্থ দেখে এসেছি। সকালে খামারে গিয়ে দেখি কে বা কারা আমার ১৪০০ হাঁসের বাচ্চা মেরে ফেলেছে।

তিনি বলেন, আমার সাথে কারো কোন শত্রুতা নেই। কিন্তু কারা এই কাজটি করল বুঝতে পারছি না। এতে আমার অনেক বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে গেল। এখন আমার সংসার চালানো অনেক কঠিন হয়ে পরবে। আমি এব্যাপারে থানায় অভিযোগ দাখিল করব।

পাইকুড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইসলাম উদ্দিন বলেন, এমন ঘটনা খুবই দু:খজনক। আমি চাই যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের উপযুক্ত বিচার হোক।

কেন্দুয়া থানার পেমই তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক সাদ্দাম হোসেন জানান, এ বিষয়ে ভুক্তভোগী খামারী থানায় এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Sakib May 06, 2024
মদনে মাছ ধরা নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত-১, আহত-৪

মদনে মাছ ধরা নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত-১, আহত-৪

 

নেত্রকোণা জেলার মদন উপজেলা ফতেপুর ইউনিয়নের ফতেপুর পশ্চিম পাড়া গ্রামের যাত্রাখালী খালের ডোবায় মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে সবুজ (১০) নামের এক শিশু নিহত এবং আরো ৪ জন আহত হয়েছে। 

ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে নেত্রকোণা জেলার মদন উপজেলা ফতেপুর ইউনিয়নের ফতেপুর পশ্চিম পাড়া গ্রামের যাত্রাখালী খালের পাড়ে।

নিহত সবুজের দাদা ইব্রাহিম মুন্সী বলেন, যাত্রাখালী খালের পাশে আমাদের পারিবারিক একটি ডোবা গত বছর একই গ্রামের হিরন এর কাছে এক বছরের জন্য লিজ দিয়েছিলাম। 

গত কার্তিক মাসে এই সময় সীমা শেষ হয়ে যায়। হিরণ ও তার লোকজন শুক্রবার দুপুরে আমাদের ডোবা সেচে মাছ ধরা শুরু করে। আমরা বাঁধা দিতে গেলে হিরনের লোকজন আমাদের উপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। 

প্রতিপক্ষের হামলায় আমার নাতি সবুজ ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। নিহত সবুজ ফতেপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের আশেক মিয়ার ছেলে। হামলায় আরো চার জন আহত হয়। আহতরা হলেন, আশেক ( ৪০), হেকিম (৪৫), সোলেমান (২০) ও হৃদয় ( ৩০)।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে ঘটনার সাথে জড়িত মল্লিক (৫০), আনচু মিয়া (৬০), চাঁন মিয়া (৪৫)সহ পাঁচ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। 

এ ব্যাপারে মদন থানার অফিসার ইনচার্জ উজ্জ্বল কান্তি সরকারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি প্রতিপক্ষের হামলায় শিশু নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থল থেকে তিন জনকে আটক করা হয়েছে। 

শিশুটির লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Sakib May 06, 2024

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় হঠাৎ ব্যাপক শিলাবৃষ্টি হয়েছে। এতে পাকা ধানের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। রবিবার ভোর ৪টার দিকে উপজেলার কুল্লাগড়া, দুগার্পুর সদর, গাওকান্দিয়া, চন্ডিগড় ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টির সঙ্গে ব্যাপক শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। এ মৌসুমে এমন শিলাবৃষ্টি পড়তে কখনো দেখেননি বলে জানান স্থানীয় কৃষকগণ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেশিরভাগ জমির ধান কাটার উপযুক্ত হয়ে গেছে তবে শ্রমিক বা ধান কাটার মেশিন সংকটে তাদের অপেক্ষা করতে হচ্ছিল। গত রাতে হঠাৎ শিলাবৃষ্টিতে ধানের শিষ থেকে বেশিরভাগই ধান ঝরে গেছে। জমির পাকা ধানগুলো ঘরে তোলার আগেই শিলাবৃষ্টির কবলে পড়ে এমন ক্ষতি যেনো কৃষকদের মুখে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। তাছাড়া এই শিলাবৃষ্টিতে মৌসুমি ফল ও গাছেরও ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।


 

কুড়ালিয়া গ্রামের কৃষক মোশারফ হোসেন বলেন, আমি ১৭ কাটা জমি লাগিয়েছিলাম কিন্তু ভাইরাসের জন্য ৭ কাটা কেটে ফেলি। সেই ৭ কাটায় ১০ মণ ধান পেয়েছি মাত্র। বাকি ১০ কাটা জমির পাকা ধান গতরাতে শিলাবৃষ্টিতে ঝরে গেছে। কয়েকদিন ধরেই কাটার জন্য চেষ্টা করছিলাম কিন্তু মেশিন পাচ্ছিলাম না। 
 

এ নিয়ে দুর্গাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিপা বিশ্বাস বলেন,এ পর্যন্ত ৪৫% জমির ধান কর্তন হয়েছে। তবে হঠাৎ শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা জানতে অফিসের লোকজন মাঠে আছেন। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পরে জানাতে পারবো।

Sakib May 06, 2024
সন্ধ্যা নামলেই এলইডির তীব্র আলো ঘটছে দুর্ঘটনা: চোখের মারাত্মক ক্ষতি

সন্ধ্যা নামলেই এলইডির তীব্র আলো ঘটছে দুর্ঘটনা : চোখের মারাত্মক ক্ষতি

 

রিকশা-ভ্যান, মোটরসাইকেলসহ নিষিদ্ধ যানবাহনের হেডলাইট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে অত্যাধিক উজ্জ্বল ও সাদা আলোর এলইডি লাইট। যা একটু কাঁপলেই অপরদিকে থাকা যানবাহন চালকসহ পথচারীদের চোখ ঝাঁপসা করতে যতেষ্ঠ। মুহুর্তে যেনো সব অন্ধ। আর  এতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।

এমনটাই নিত্যচিত্র এখন দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার আঞ্চলিক সড়ক, মহাসড়কসহ গ্রামীণ সড়কের।

উপজেলা প্রশাসন কিংবা পৌরসভার উদ্যোগেও নেয়া হয়না এসব নিষিদ্ধ লাইটের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ। ফলে যে যার মতো যেকোনো যানবাহনে ব্যবহার করছে ক্ষতিকারক এই এলইডি লাইট।

চক্ষু চিকিৎসকদের মতে, সহনীয় মাত্রার বেশি আলোকরশ্মি উৎপন্ন করায় এলইডি লাইট সরাসরি চোখের রেটিনায় আঘাত করে। এতে কর্নিয়াসহ দৃষ্টি শক্তির মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।

জানা যায়, বর্তমানে দুর্ঘটনা দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে ব্যাটারিচালিত ভ্যান, ইজিবাইক, ইঞ্জিনচালিত নছিমন, করিমন ও পাগলু গাড়ির সাদা লাইটের আলো। অবৈধ যান হিসেবে খ্যাত এসব যানবাহনের হেডলাইটের সাদা আলোয় চলাচল করতে চরম সমস্যা হচ্ছে পথচারীদের। প্রতিদিন একটু সন্ধ্যা হলেই অবৈধ যানের চালকেরা তাদের সুবিধার্থে এলইডি লাইট জ্বালিয়ে সড়কে চলাচল করছেন। এলইডি আলোর রশ্মি এতই বেশি যে তার বিপরীত দিক থেকে আসা যানবাহনের চালক বা পথচারীদের সরাসরি চোখে পড়ে। এ সময় চোখে দেখতে না পেয়ে ঘটছে দুর্ঘটনা।

ফুলবাড়ী জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক চন্দ্রনাথ গুপ্ত বলেন, সন্ধ্যার পর পথ চলাচলের সময় এলইডি লাইটের কারণে চোখে কিছু দেখা যায় না। দুর্ঘটনার মূল কারণ এখন এসব নিষিদ্ধ এলইডি লাইট। এদিকগুলোতে সংশ্লিষ্টদের কোনো নজর নেই। তাদের নজরদারী অত্যান্ত জরুরী হয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল কাইয়ুম বলেন, অবৈধ এসব যানবাহনের আলোর গতি সাধারণ আলোর চেয়ে অনেক বেশি। এ জাতীয় লাইটের আলো সামনে পড়লে দুই-তিন মিনিট চোখে কিছুই দেখা যায় না। তা ছাড়া বেশির ভাগ সময় লাইটগুলো উঁচু (হাই) করে দেওয়া থাকে।

এতে চালক ও সাধারণ মানুষের পথ চলতে চরম অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। এ কারণে সড়ক পারাপারের সময় প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোটবড় দুর্ঘটনা। বিষয়টি জরুরিভাবে প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন।

ইজিবাইকের চালক মো. ঝিনুক বলেন, ইজিবাইক কেনার সময় গাড়ির সঙ্গে যে লাইটটি ছিল সেটি ভালো ছিল। কিন্তু সেটি নষ্ট হওয়ার পর স্থানীয় দোকানদারেরা বর্তমানে লাগানো এলইডি লাইট বিক্রি করেছেন। এটির আলো একটু বেশি চোখে ধরে।  

ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোস্তাফিজার রহমান বলেন, পাগলু, নসিমন, করিমন, রিকশাভ্যানসহ যা আছে এগুলোর মহাসড়কে চলাচলের কোনো আইন নেই। এসব যানবাহন তো অবৈধ। এসব যানবাহনসহ অন্য যেগুলোতে এলইডি লাইট লাগানো আছে, সেগুলো বন্ধ করার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মশিউর রহমান বলেন, যানবাহনে ব্যবহৃত এলইডি লাইট মানুষেরচোখের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক। এই লাইটের প্রভাবে সরাসরি চোখের রেটিনার কর্মক্ষমতা কমে যায়। ফলে চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে যেতে শুরু করে।

ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মো. আল কামাহ্ তমাল বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে এলইডি লাইট ব্যবহার বন্ধ করার জন্য বিধিমোতাবেক আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Sakib May 06, 2024
আটপাড়ায় বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু

আটপাড়ায় বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু

 

নেত্রকোনার আটপাড়ায় হাওরে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে দিলোয়ার মিয়া (৩৫) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।

আজ সোমবার সকালে উপজেলার স্বরমুশিয়া হাওরে বজ্রপাতে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

নিহত কৃষক দিলোয়ার মিয়া উপজেলার স্বরমুশিয়া গ্রামের ফিরোজ মিয়ার ছেলে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আটপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তাওহিদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ওই কৃষক সকালে নিজের জমির ধান কাটতে গেলে বজ্রপাতে আহত হন।

পরে অন্যরা উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

Image not found

ছবি: সংগৃহীত  

সাগর থেকে মাছ ধরে ফেরার পথে মিয়ানমারের নৌ বাহিনীর ছোঁড়া গুলিতে কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের ২ জেলে আহত হয়েছেন। আহতদের একজনকে টেকনাফ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা প্রদান করা হলেও অপরজনকে গুরুতর অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

আজ রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বঙ্গোপসাগর ও নাফনদীর মোহনাস্থ নাইকংদিয়া এলাকায় এই গুলি বষর্ণের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গণি।

আহত জেলেরা হলেন, টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপের উত্তর পাড়ার আলী আহমদের ছেলে মোহাম্মদ ইসমাইল (২০) ও দক্ষিণ পাড়ার সিদ্দিক আহমদের ছেলে মোহাম্মদ ফারুক (২৫)।

টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গণি জানিয়েছেন, এফবি মায়ের দোয়া নামের একটি ফিশিং ট্রলার সাগর থেকে মাছ ধরে কূলে ফেরার সময় মিয়ানমারের একটি জাহাজ থেকে ছোঁড়া গুলিতে ২ জন আহত হয়েছেন। আহতদের প্রথমে টেকনাফ হাসপাতালে আনা হলে একজনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।

টেকনাফ স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রনয় রুদ্র জানান, আহতদের মধ্যে ইসমাইল সামান্য আহত। তাকে টেকনাফে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। অপরজন ফারুকের ৩টি গুলি লেগেছে। হাত ও পায়ে লাগা গুলিতে গুরুতর হওয়ায় তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হচ্ছে।

ট্রলারের মাঝি মোহাম্মদ ইউসুফ জানান, সেন্ট মার্টিন সংলগ্ন সাগরে মাছ ধরা শেষে শাহপরীর দ্বীপ ঘাটে ফিরছিলাম। এসময় নাইক্ষ্যংদিয়া সংলগ্ন অংশে মিয়ানমার নৌবাহিনীর একটি জাহাজ আমাদের অতিক্রম করছিল। ওই জাহাজ থেকে হঠাৎ আমাদের ট্রলার লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। এতে আমাদের দুইজন জেলে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

মাঝি ইউসুফ আরও বলেন, ‘আমরা নাফনদের বাংলাদেশের জলসীমায় ছিলাম এবং হাত উঁচু করে, বাংলাদেশী পতাকা দেখিয়ে তাদের গুলি না করতে ইশারা করছিলাম। এরপরও তারা মানেনি।’

টেকনাফ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. সুরাইয়া ইয়াছমিন জানান, আহতদের মধ্যে ইসমাইল সামান্য আহত। তাকে টেকনাফে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। অপর জন ফারুকের ৩টি গুলি লেগেছে। হাত ও পায়ে লাগা গুলিতে গুরুতর হওয়ায় তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হচ্ছে।

[img featured="1" src="https://dainikamadershomoy.com/_cdn/images/large/2024/04/06/news_1712404588647.webp"/]
[img featured="1" src="https://dainikamadershomoy.com/_cdn/images/large/2024/04/21/news_1713689259288.webp"/]
[img featured="1" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEglBfrxpHD-D0expKFN6N_BsMrfqLP-u2Nh_kMCepmf2uweTyFRJRabODdVyjvfVVLFP87zJ1ho-vMaSVv-qLuznr2TQnvgSUTCgsr_kIyfxibgGBzQRUXcRynMzpb2YANDntwBzlaOFUP-/s1600-rw/google-glass-700x357.jpg"/]

পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল ভারত

পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। প্রায় ছয় মাস পর এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল ভারত। আজ শনিবার দেশটির বৈদেশিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক কেন্দ্রীয় সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি) এক বিজ্ঞপ্তিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার তথ্য জানিয়েছে।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার সংবাদে বলা হয়েছে, ডিজিএফটি পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানিমূল্য (মিনিমাম এক্সপোর্ট প্রাইস-এমইপি) নির্ধারণ করেছে ৫৫০ ডলার। সরকারের এই নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও জানানো হয়েছে।

গত মার্চ মাসের শেষ দিকে পেঁয়াজ রপ্তানিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ভারত। তখন বিশ্লেষকেরা বলেছিলেন, চলমান লোকসভা নির্বাচনের আগে দেশের বাজারে যেন পেঁয়াজের দাম না বাড়ে, তা নিশ্চিত করতেই ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন লোকসভা নির্বাচনের মধ্যেই দেশটির সরকার রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল।

এই খবরে ভারতের মহারাষ্ট্রের পেঁয়াজ চাষিরা স্বস্তি পাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি হলো, ভারতে পেঁয়াজের উৎপাদন সবচেয়ে বেশি হয় মহারাষ্ট্রে। জানা যায়, এপ্রিল মাসে ওই রাজ্যের কিছু পাইকারি বাজারে প্রতি ১০০ কেজি পেঁয়াজের দাম ১ হাজার ২০০ রুপিতে নেমে আসে; গত ডিসেম্বর মাসে যে দাম ছিল ৪ হাজার ৫০০ রুপি। নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর থেকেই মহারাষ্ট্রের চাষিরা এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আসছিলেন। ভারতের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোও তাদের পক্ষে ছিল। এবার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিকভাবেই বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পেঁয়াজ রপ্তানি একেবারে বন্ধ করেনি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এপ্রিল মাসে বাংলাদেশসহ ছয়টি দেশে প্রায় এক লাখ টন পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দেয় তারা। বাকি পাঁচটি দেশ হলো সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভুটান, বাহরাইন, মরিশাস ও শ্রীলঙ্কা।

ভারত বিশ্বের সবচেয়ে বড় পেঁয়াজ রপ্তানিকারক দেশ। গত ডিসেম্বরে তারা প্রথম পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল ৩১ মার্চ পর্যন্ত। কিন্তু তারপর অনির্দিষ্টকালের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা হয়।

বাংলাদেশ যত পেঁয়াজ আমদানি করে, তার সিংহভাগই আসে ভারত থেকে। ভারতের পেঁয়াজ না আসায় দেশের বাজারেও পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়।

বিএনপি
বিএনপি

এবার উপজেলা পরিষদের দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচনে অংশ নেওয়া ৬১ জনকে একযোগে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। আজ শনিবার বিকেলে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে বহিষ্কৃত ব্যক্তিদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় গঠনতন্ত্র মোতাবেক বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পদ থেকে তাঁদের বহিষ্কার করা হয়েছে।

দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নামে এই বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়। বহিষ্কৃত নেতাদের মধ্যে ২৬ জন চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী। বাকি ৩৫ জনের মধ্যে ১৯ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে এবং ১৬ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী রয়েছেন।

বহিষ্কৃত যাঁরা

বিএনপির তালিকা অনুযায়ী, বহিষ্কৃত নেতারা হলেন পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার ময়দান দিঘী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি হাবিব আল আমিন, দেবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম, সৈয়দপুর (সাংগঠনিক জেলা) যুগ্ম সম্পাদক রিয়াদ আরফান সরকার, দিনাজপুর জেলা বিএনপির সদস্য রিয়াজুল ইসলাম, নাটোরের লালপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ভিপি আরিফ, বাঘাতিপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর হোসেন, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি জুলফিকার আলী, দিঘলিয়ায় খুলনা জেলা বিএনপির সাবেক সহশ্রমবিষয়ক সম্পাদক মো. এনামুল হক, খুলনা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাব্বির আহমেদ, বরগুনা সদরে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল হালিম, মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল মান্নান, মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য খন্দকার লেয়াকত হোসেন, টাঙ্গাইলের ভুয়াপুর উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলায় যুবদলের কেন্দ্রীয় সদস্য মাহবুবুর রহমান, ময়মনসিংহ সদর থানা কৃষক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক হোসাইন নূর মোহাম্মদ আনির, নকলায় শেরপুর জেলা বিএনপির সদস্য মোকসেদুল হক, ধর্মপাশায় উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম চৌধুরী, তাহিরপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি আবুল কাশেম, বিশ্বম্ভরপুরে উপজেলা বিএনপির সদস্য হারুনুর রশিদ ও সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা মোহন মিয়া, জামালগঞ্জে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নুরুল হক আফিন্দি, গোয়াইনঘাটে সিলেট জেলা বিএনপির কোষাধ্যক্ষ শাহ আলম, হবিগঞ্জে নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মজিবুর রহমান, কক্সবাজারের পেকুয়ায় উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি শাফায়েত আজিজ, বান্দরবানের লামায় উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি জাকের হোসেন মজুমদার ও চাঁদপুরে হাজীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সুফিয়ান।

দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠেয় ১৫৯টি উপজেলায় বিএনপির এই ২৬ জন চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তের পর তাঁদের নির্বাচন থেকে ফেরানোর নানা চেষ্টা করা হয়। এ লক্ষ্যে প্রার্থীদের কাছে স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্তের একটি চিঠি পাঠানো হয়। পাশাপাশি দলের কেন্দ্রীয়, বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতাদের বিশেষভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয় নির্বাচনে অংশ নেওয়া নেতাদের বোঝানোর জন্য। সব উপেক্ষা করেই তাঁরা নির্বাচনে নেমেছেন।

বিএনপির নেতা রুহুল কবির রিজভী প্রথম আলোকে বলেন, ‘দল করতে হলে দলের শৃঙ্খলা মানতে হবে। দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন করবে না। সেখানে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া মানে এই অবৈধ সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়া। দলের চেয়ে নির্বাচনই যদি বড় হয়, তাহলে তো তাঁদের আগে পদত্যাগ করা উচিত। আপনি দল করবেন, আবার দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না, এটা হতে পারে না।’

পুলিশের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। ঢাকা, ২৯ এপ্রিল
পুলিশের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। ঢাকা, ২৯ এপ্রিলছবি: সংগৃহীত

গুজব ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার সকালে পুলিশ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো. আতিকুল ইসলাম এই নির্দেশনা দেন।

অতিরিক্ত আইজিপি মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, এই ধরনের কোনো গুজব ছড়ালে তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ছাড়া গুজব প্রতিরোধে গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানোর ওপরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে মাঠপর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়ে আতিকুল ইসলাম বলেন, ফিটনেসবিহীন গাড়ি কোনো অবস্থাতেই চলতে দেওয়া যাবে না। তিনি ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দেন।

অপরাধ পর্যালোচনা সভায় হারানো মুঠোফোন উদ্ধারে তৎপরতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন অতিরিক্ত আইজিপি। তিনি বলেন, পুরোনো ফোন কেনাবেচার জায়গায় নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করতে হবে।

সভায় ডাকাতির মামলা গুরুত্বসহ তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিচার নিশ্চিত করার ওপর জোর দেওয়া হয়। এ ছাড়া পুলিশ হত্যা মামলার তদন্ত দ্রুত সম্পন্ন এবং প্রসিকিউশন কার্যক্রম মনিটর (তদারকি) করার জন্য সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এই সভায় সব মহানগর পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলার পুলিশ সুপার অনলাইনে অংশগ্রহণ করেন। এ ছাড়া পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

গ্রেপ্তারের পর রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে মিল্টন সমাদ্দার
গ্রেপ্তারের পর রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে মিল্টন সমাদ্দারছবি: সংগৃহীত

‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ নামে একটি আশ্রয়কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো ‘ভয়ংকর’ বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন–অর–রশীদ। ডিবি পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেছেন, ‘মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে, সেগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করা হবে। যদি তিনি এগুলো করে থাকেন, তবে ভয়ংকর অপরাধ করেছেন। প্রমাণ পাওয়া গেলে তাঁকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

প্রতারণাসহ বিভিন্ন অভিযোগে আজ বুধবার রাতে ঢাকার মিরপুর থেকে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে ডিবি। পরে রাতেই ঢাকার মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন অতিরিক্ত কমিশনার হারুন–অর–রশীদ। সেখানে মিল্টনের বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে কথা বলেন তিনি।

ঢাকার মিরপুরে ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ নামে একটি আশ্রয়কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন মিল্টন সমাদ্দার। তাঁর ভাষ্য, সেখানে আশ্রয়হীন বৃদ্ধ ও শিশুদের আশ্রয় দেওয়া হয়। সম্প্রতি সাভারে জমি কিনে আশ্রয়কেন্দ্রের স্থায়ী নিবাস বানানো হয়েছে। মিল্টন সমাদ্দার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অসহায় বৃদ্ধ ও শিশুদের আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে প্রচার চালান। এ-সংক্রান্ত ভিডিও চিত্র দেন। ফেসবুকে তাঁকে অনুসরণ করেন ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ।

সম্প্রতি কিছুদিন ধরে মিল্টনের বিরুদ্ধে নানা প্রতারণার অভিযোগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। মিল্টন ফেসবুকে ভিডিও দিয়ে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। এরই মধ্যে তাঁর সঙ্গে কাজ করা এবং সংশ্লিষ্ট কয়েকজন তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ আনেন।

পুলিশ কর্মকর্তা হারুন–অর–রশীদ বলেন, ‘মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে অনেকগুলো অভিযোগ উঠেছে। তাঁর প্রতিষ্ঠিত আশ্রয়কেন্দ্রে অসহায় শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে আসতেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশের পর ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে তিনি স্বীকার করেছেন, সেখানে (আশ্রয়কেন্দ্র) অপারেশন থিয়েটার (অস্ত্রোপচারকেন্দ্র) আছে। যদি অপারেশন থিয়েটার থাকে বা হাসপাতাল থাকে, সেটির লাইসেন্স থাকতে হয়। কিন্তু তিনি এ–সংক্রান্ত কোনো লাইসেন্স দেখাতে পারেননি।’

মিল্টন সমাদ্দার আশ্রয়কেন্দ্রের মাধ্যমে বেশির ভাগ লাশ রাতে দাফন করতেন বলে একটি ভিডিওতে তাঁকে বলতে শোনা গেছে। এ প্রসঙ্গে ডিবি কর্মকর্তা হারুন–অর–রশীদ বলেন, ‘তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলো, রাতে লাশ দাফন করেন কেন? তিনি জবাব দিয়েছেন, রাতে লাশ দাফন না করলে মানুষ আমাকে (মিল্টন) বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। এটা তিনি (মিল্টন) উত্তর দিয়েছেন। তাঁকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের সময় এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হবে।’

মিল্টন সমাদ্দার
মিল্টন সমাদ্দার
ছবি: সংগৃহীত

মিল্টন সমাদ্দার লাশ দাফনের যে হিসাব দিয়েছেন, সেখানেও গরমিল আছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা হারুন–অর–রশীদ। তিনি বলেন, ‘আমরা এটাও জেনেছি, ইতিমধ্যে তিনি ৯০০ লাশ দাফন করেছেন। কিন্তু ৮৩৫টি লাশের হিসাবে গরমিল পাওয়া যায়। এসব লাশ দাফনের কোনো ডকুমেন্ট (নথি) তাঁর কাছে নেই। তিনি গণমাধ্যমের কাছে স্বীকার করেছেন, নিজেই মৃত্যুসনদ তৈরি করে চিকিৎসকের স্বাক্ষর ও সিল জাল (নকল) করতেন। তাঁর আশ্রমের পাশে একটা মসজিদ আছে, সেখান থেকেও প্রশ্ন উঠেছে, লাশের শরীরে কিডনির পাশে রক্তের দাগ রয়েছে। এসব বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’

মিল্টন সমাদ্দারের দুটি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে জানিয়ে ডিবি কর্মকর্তা হারুন–অর–রশীদ বলেন, ‘তাঁর একটি আশ্রয়কেন্দ্র মিরপুরে এবং অন্যটি সাভারে। তিনি বলেছেন, আশ্রয়কেন্দ্রে ৫০০ থেকে ৭০০ লোক রয়েছে। কিন্তু সেখানে (আশ্রয়কেন্দ্র) খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০–৩০ বা ৪০ জনের বেশি নেই। আমাদের কথা হলো, আমরা তাঁকে নিয়ে (গ্রেপ্তার) এসেছি। কিছু অভিযোগকারী রয়েছে, তাঁরা মামলা করবেন। আমরা তাঁকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করব, কত সংখ্যক মানুষ তাঁর আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়েছিলেন। সেখানে কত সংখ্যক মানুষ মারা গেলেন। তিনি যেখানে অপারেশন থিয়েটার স্থাপন করেছেন, সেখান থেকে কিডনি বিক্রি করেছেন কি না, সেই অভিযোগটিও তদন্ত করা হবে।’

মিল্টন সমাদ্দারের বাড়ি বরিশালের উজিরপুরে জানিয়ে হারুন–অর–রশীদ বলেন, ‘মিল্টনের উত্থান হচ্ছে বাবাকে পেটানোর পর এলাকাবাসী তাঁকে এলাকাছাড়া করে। তারপর শাহবাগে এসে একটি ফার্মেসিতে কাজ করেন। সেখানে ওষুধ চুরির কারণে তাঁকে বের করে দেওয়া হয়। একটা পর্যায়ে কিছু লেখাপড়া করেন। পরে মিঠু হালদার নামের এক নার্সকে বিয়ে করেন। বিয়ে করার পর স্ত্রীকে নিয়ে মিরপুরে ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ নামে একটি আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করেন।’

রাজধানীর গাবতলী পশুর হাট
রাজধানীর গাবতলী পশুর হাটছবি: প্রথম আলো

রাজধানীর ‘গাবতলী গবাদিপশুর হাট’ ইজারার দরপ্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে সর্বোচ্চ দরদাতা নির্বাচিত হয়েছিলেন চলচ্চিত্র প্রযোজক ও অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ওরফে ডিপজল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে ইজারামূল্যের পুরো টাকা পরিশোধ করেননি। এরই মধ্যে হাট দখলে নিয়ে তাঁর কর্মীদের দিয়ে হাসিল আদায় করছেন তিনি।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) কর্মকর্তারা বলছেন, পুরো টাকা পরিশোধ না করায় ডিপজলকে এখনো কার্যাদেশ প্রদান ও হাট হস্তান্তর করা হয়নি। তাঁদের দাবি, হাটে করপোরেশনের নিজস্ব কর্মীরা হাসিল আদায় করছেন।

গাবতলী পশুর হাটের ইজারা দিতে (বাংলা ১৪৩১ সনের জন্য) গত ২ ফেব্রুয়ারি বিজ্ঞপ্তি দেয় ডিএনসিসির সম্পত্তি বিভাগ। দরপত্রে অংশ নেওয়া দুই ব্যক্তির মধ্যে ডিপজলের প্রস্তাবিত ইজারামূল্য ছিল সর্বোচ্চ, ১৭ কোটি ১২ লাখ ১৫ হাজার টাকা। আর আগের ইজারাদার লুৎফর রহমান দর দিয়েছিলেন ১৬ কোটি ২০ লাখ টাকা।

হাটের ইজারাসংক্রান্ত কিংবা ডিপজলের টাকা পরিশোধ না করেই হাট দখলে নেওয়ার মতো অনিয়মগুলো লুকাতে সম্পত্তি বিভাগের কর্মকর্তা ও অন্য কর্মীদের রাখঢাক করার বিষয়টি ছিল স্পষ্ট। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উত্তর সিটির ঊর্ধ্বতন দুই কর্মকর্তা জানান, বিভাগীয় প্রধান হিসেবে মাহে আলমের সুযোগ ছিল ডিপজলের জামানত বাজেয়াপ্ত করে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার।

দরপত্র যাচাই শেষে সর্বোচ্চ দরদাতা ডিপজলকে ইজারামূল্যের সঙ্গে অন্যান্য ফি পরিশোধ করতে গত ২১ মার্চ চিঠি দেয় ডিএনসিসির সম্পত্তি বিভাগ। চিঠিতে দরপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া জামানতের ৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা বাদে আরও ১৭ কোটি ২৬ লাখ ৭৯ হাজার টাকা সাত কার্যদিবসের মধ্যে পরিশোধ করতে বলা হয়।

কিন্তু ডিপজল নির্ধারিত সময়ে পুরো টাকা পরিশোধ না করে গত ৩১ মার্চ উত্তরের মেয়র বরাবর টাকা জমা দেওয়ার সময় বাড়ানোর আবেদন করেন। সময় চান হাট হস্তান্তরের আগের দিন, অর্থাৎ গত ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত (চৈত্র মাসের ৩০ তারিখ)। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যেও পুরো টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হন ডিপজল।

টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে দরদাতার জামানত বাজেয়াপ্ত করার বিষয় দরপত্র বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ ছিল। বিজ্ঞপ্তির ১২ নম্বরে উল্লেখ আছে, দরপত্র গৃহীত হওয়ার ৭ দিনের মধ্যে দরমূল্য (জামানত বাদে বাকি টাকা), অনুমোদিত দরের ওপর ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর, ১০ শতাংশ আয়কর, ইজারামূল্যের ওপর ৫ শতাংশ জামানত (ফেরতযোগ্য) পে-অর্ডার করে জমা দিতে হবে। ব্যর্থ হলে দরপত্রের সঙ্গে দেওয়া দরমূল্যের ৩০ শতাংশ জামানতের টাকা বাজেয়াপ্ত করা হবে।

করি নাই (টাকা পরিশোধ), করব। এটা আমি সিটি করপোরেশনকে বলব। আপনি কে? আমি টাকা পরিশোধ করি বা করি না, এটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার।
ডিপজল, চলচ্চিত্র প্রযোজক ও অভিনেতা

সব মিলিয়ে হাটের ইজারা পেতে ডিপজলের পরিশোধ করার প্রয়োজন ছিল ২২ কোটি ৪০ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। কিন্তু সিটি করপোরেশন ডিপজলের জামানত বাজেয়াপ্ত করেনি।

হাট দখল করে হাসিল আদায়

রাজধানীর গাবতলী পশুর হাট  
রাজধানীর গাবতলী পশুর হাট
ছবি: প্রথম আলো

গত ২৯ এপ্রিল দুপুরে গাবতলী হাটে গিয়ে দেখা যায়, ডিপজলের নিয়োজিত কর্মীরা হাট পরিচালনা করছেন। পশু কিনতে আসা ব্যবসায়ী, কসাই ও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে আদায় করছেন হাসিলের টাকাও। সেখানে করপোরেশনের কর্মীদের কাউকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়নি।

হাটের প্রবেশপথে হাসিল আদায় করার নির্মাণাধীন কক্ষের দেয়ালে ছিল একটি ব্যানার টানানো। তাতে লেখা, ইজারাসূত্রে মালিক ‘আলহাজ মনোয়ার হোসেন ডিপজল’। পাশের আরেকটি কক্ষে হাসিল আদায় করছিলেন এক ব্যক্তি।

দেওয়ান মোহাম্মদ ইকরাম হোসেন নামের ওই ব্যক্তি নিজেকে ডিপজলের ভাতিজা বলে পরিচয় দেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, হাটের বর্তমান ইজারাদার তাঁর চাচা ডিপজল। সিটি করপোরেশন গত ১৫ এপ্রিল তাঁদের কাছে হাট বুঝিয়ে দিয়েছে। ওই দিন থেকেই তাঁরা হাসিল আদায় করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সম্পত্তি বিভাগের একজন কর্মী প্রথম আলোকে জানান, ডিপজলের লোকেরাই হাট চালাচ্ছেন। হাটে হাসিল আদায়ের বিষয়ে তাঁদের কাউকে কোনো নির্দেশ দেওয়া হয়নি।  

তথ্য প্রদানে অসহযোগিতা

ইজারার তথ্য জানতে গত বুধবার এই প্রতিবেদক যান উত্তর সিটির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মাহে আলমের কাছে। তিনি কোনো তথ্য দিতে রাজি হননি। পরে জনসংযোগ কর্মকর্তা মকবুল হোসেনের মাধ্যমে লিখিত প্রশ্ন পাঠানো হয়। জনসংযোগ কর্মকর্তাকেও তিনি কোনো তথ্য দেননি।

হাট ইজারা নিতে ডিপজল মোট কত টাকা পরিশোধ করেছেন, কত টাকা এখনো বকেয়া আছে, কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে কি না, কবে হাট বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, বকেয়া টাকা পরিশোধে কত দিনের সময় দেওয়া হয়েছে—এসব তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছিল।

হাটের ইজারাসংক্রান্ত কিংবা ডিপজলের টাকা পরিশোধ না করেই হাট দখলে নেওয়ার মতো অনিয়মগুলো লুকাতে সম্পত্তি বিভাগের কর্মকর্তা ও অন্য কর্মীদের রাখঢাক করার বিষয়টি ছিল স্পষ্ট। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উত্তর সিটির ঊর্ধ্বতন দুই কর্মকর্তা জানান, বিভাগীয় প্রধান হিসেবে মাহে আলমের সুযোগ ছিল ডিপজলের জামানত বাজেয়াপ্ত করে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার।  

হাট হস্তান্তরে আদালতের নির্দেশ

নির্ধারিত সময়ে ডিপজল পুরো টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে গত ৪ এপ্রিল ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম ও প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মাহে আলমের কাছে হাট ইজারা নিতে আবেদন করেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা লুৎফর রহমান। আবেদনে তিনি ডিপজলের দেওয়া সর্বোচ্চ দরটাই পরিশোধ করে ইজারা নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। কিন্তু করপোরেশন থেকে কোনো সাড়া পাননি তিনি।

পরে উচ্চ আদালতে হাটের ইজারা নিয়ে একটি রিট করেন লুৎফর রহমান। গত ২৩ এপ্রিল রিটের নিষ্পত্তি করেন আদালত। আদেশে লুৎফর রহমানকে সর্বোচ্চ দর ১৭ কোটি ১২ লাখ ১৫ হাজার টাকা জমা দেওয়ার অনুমতি দিতে এবং ১৪৩১ সনের জন্য তাঁর কাছে হাটটি হস্তান্তর করতে বলা হয়। রিটের বিবাদী উত্তর সিটির মেয়র, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তাকে এ নির্দেশ দেন আদালত।

লুৎফর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আদালতের রায়ের অনুলিপি ও হাটের জন্য ব্যাংক পে-অর্ডারের সঙ্গে একটি আবেদন নিয়ে গত ৩০ এপ্রিল তিনি সিটি করপোরেশনে গিয়েছিলেন। মেয়র, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা—কোনো দপ্তরেই তাঁর আবেদন গ্রহণ করা হয়নি।


নির্মাণাধীন হাসিল আদায় কক্ষ  
নির্মাণাধীন হাসিল আদায় কক্ষ
ছবি: প্রথম আল

উত্তর সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ইজারাদারকে এখনো কার্যাদেশ দেওয়া হয়নি। কারণ, কিছু টাকা বাকি আছে। ওই টাকা যত দ্রুত সম্ভব পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। অবিলম্বে টাকা জমা না দিলে তাঁকে হাট ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করা হবে। হাটটি বর্তমানে খাস আদায় পদ্ধতিতে পরিচালনা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

ডিপজলের হাট দখল ও তাঁর কর্মীদের মাধ্যমে পরিচালনা করার বিষয়টি জানানো হলে মীর খায়রুল আলম বলেন, ‘আমাদের লোক হাসিল আদায় করছে। দৈনিক ভিত্তিতে টাকা জমা হচ্ছে। যদি ওই রকম কিছু হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই বিষয়টি দেখা হবে।’ আদালতের রায়সংক্রান্ত কোনো কাগজ তাঁরা পাননি বলেও জানান তিনি।

এদিকে কার্যাদেশ ছাড়াই হাট দখল ও পরিচালনার বিষয়ে বক্তব্য জানতে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ও সন্ধ্যায় একাধিকবার ডিপজলের মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। পরিচয় দিয়ে খুদে বার্তাও পাঠানো হয়। পরে প্রতিবেদককে ফোন করে তিনি গতকাল শনিবার এফডিসিতে সরাসরি দেখা করে কথা বলবেন বলে জানান।


গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ডিপজলের মুঠোফোনে আবারও বার্তা পাঠিয়ে গতকাল দেখা করার সময় জানতে চাওয়া হয়। তবে কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। তাই গতকাল সকাল ১০টার কিছু পর তাঁর মুঠোফোনে কল করে সময় জানতে চান এই প্রতিবেদক। তখন তিনি জানান, এফডিসির সভা স্থগিত করা হয়েছে। তাই তিনি সেখানে যাবেন না।

পরে হাটের বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে উত্তেজিত হয়ে ডিপজল বলেন, ‘গাবতলী হাট নিয়ে আপনার কিসের দরকার? সিটি করপোরেশন জানে, আমি দিছি (ইজারার টাকা) কি দেই নাই। আমার টাকা ক্লিয়ার।’ এ সময় উত্তেজিত হয়ে ‘রাখেন টেলিফোন’ বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন তিনি।

পুরো বক্তব্য জানতে ডিপজলকে আবার ফোন করা হয়। তখন তিনি বলেন, ‘করি নাই (টাকা পরিশোধ), করব। এটা আমি সিটি করপোরেশনকে বলব। আপনি কে? আমি টাকা পরিশোধ করি বা করি না, এটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার।’



চোর চক্রের সদস্যদের কাছ থেকে উদ্ধার করা আগ্নেয়াস্ত্র এবং এসব অবৈধ অস্ত্রের মালিক মো. শাহীন
চোর চক্রের সদস্যদের কাছ থেকে উদ্ধার করা আগ্নেয়াস্ত্র এবং এসব অবৈধ অস্ত্রের মালিক মো. শাহীনছবি: সংগৃহীত

ঈদের ছুটিতে পুরান ঢাকার ইসলামবাগের একটি বাসায় হওয়া চুরির ঘটনার তদন্তে নেমে চোর চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁদের বেশির ভাগেরই চোর হিসেবে পুলিশের তালিকায় নাম রয়েছে। কিন্তু এই চক্রের সদস্যদের কাছ থেকে ৫টি অবৈধ অস্ত্র ও ৩৯টি গুলি উদ্ধার করেন তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

অস্ত্রগুলোর মধ্যে চারটি বিদেশি পিস্তল এবং দেশে তৈরি একটি আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। সাধারণ চুরির ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের কাছে এসব অস্ত্র কীভাবে এল, সে প্রশ্ন দেখা দেয় পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে। তদন্তে বেরিয়ে আসে, এক বছর আগে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা এলাকার একটি বাসা থেকে টাকা ও স্বর্ণালংকারের সঙ্গে এসব আগ্নেয়াস্ত্র চুরি করেছিলেন চক্রের সদস্যরা। পরে ওই বাসার মালিক মো. শাহীনসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আজ রোববার বিকেলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) খ মহিদ উদ্দিন। তিনি বলেন, শাহীনের বাসায় চুরির ঘটনা ঘটলেও তিনি থানায় কোনো মামলা করেননি। কারণ, অস্ত্রগুলো ছিল অবৈধ।

ঘটনাটি পুলিশের কাছে স্পষ্ট হওয়ার পর ২২ থকে ২৭ এপ্রিল টানা পাঁচ দিন ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে শাহীন ও তাঁর চার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়। অন্য ব্যক্তিরা হলেন মো. রাজীব হোসেন ওরফে রানা (২৮), মো. আবুল হাসান ওরফে সুজন (২৫), মো. পারভেজ নুর (৩৮) ও মানিক চন্দ্র দাস (৩৬)। পুলিশ বলছে, এই চক্রের আরও দুই সদস্য রশিদ মিয়া (৪৬) ও হাসান শাহারিয়ার পাপ্পু (৩৫) পলাতক রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রশিদ বিদেশে আছেন। আর দেশে থাকা শাহারিয়ারকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে রাজীবের বিরুদ্ধে ১০টি মামলা, হাসানের বিরুদ্ধে ১টি, মানিকের বিরুদ্ধে ৪টি ও পারভেজের বিরুদ্ধে ২টি মামলা রয়েছে। বর্তমানে তাঁরা পুলিশের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কারাগারে রয়েছেন।

গত এক বছরে এই অস্ত্রগুলো নানা কৌশলে হাতবদল হয়েছে উল্লেখ করে পুলিশ কর্মকর্তা মহিদ উদ্দিন বলেন, সাধারণত কোনো চক্র যখন গড়ে ওঠে, তখন তারা নানা সরঞ্জাম সংগ্রহ করে বড় ধরনের কাজ করে থাকে। তেমনি এই অস্ত্রগুলোর অপব্যবহারের সুযোগ ছিল। তবে এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে, তাতে অস্ত্রগুলো একাধিকবার হাতবদল হয়েছে। কেনা-বেচা হয়েছে। কিন্তু অস্ত্রগুলোর কোনো ধরনের অপব্যবহারের তথ্য পাওয়া যায়নি।

এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপির এই অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, শাহীন এসব অবৈধ অস্ত্র কোথা থেকে সংগ্রহ করেছেন, কী কারণে সংগ্রহ করেছিলেন, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

ছেলের চুরির সহযোগী মা

গত ঈদুল ফিতরের ছুটিতে ১২ এপ্রিল ইসলামবাগের বাসায় চুরির ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. মামুন (৩৪) ও তাঁর মা হাসিনা বেগম (৫৭), মো. মিরাজ হোসেন (৩৫), মো. সায়মন (৩০), অমিত হাসান ইয়াসিন (২১), বরুন (৫০) ও জামিলা খাতুন হ্যাপি (১৮)।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কর্মকর্তা মহিদ উদ্দিন বলেন, মামুন দীর্ঘদিন ধরে চকবাজার এলাকায় চুরি করেন। এ কাজে মামুনের অন্যতম সহযোগী তাঁর মা হাসিনা বেগম। তাঁরা স্থানীয়ভাবেই চোর হিসেবে পরিচিত। চুরির মামলায় তাঁরা একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছেন। মামুনের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় ২২টি মামলা রয়েছে। চুরির জন্য মামুনের ১০ থেকে ১২ জনের বাহিনী রয়েছে।

৩৩ ভরি সোনা চুরির মূল পরিকল্পনাকারী মোবারককে মোংলা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ডিবি
৩৩ ভরি সোনা চুরির মূল পরিকল্পনাকারী মোবারককে মোংলা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ডিবিছবি: সংগৃহীত

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গত দুই দিন অভিযান চালিয়ে সিঁধেল চোর চক্রের ৩৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) বিভাগ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ৬১ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ প্রায় আট লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। এ সময় ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন–অর–রশীদ বলেন, ঈদের আগে ও পরে ঢাকা মহানগরে কয়েকটি সিঁধেল চুরির ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় রাজধানীর বিভিন্ন থানায় কয়েকটি মামলা হয়। এরপর চোর ধরতে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে ডিবি।

হারুন–অর–রশীদ আরও বলেন, সিঁধেল চুরির ঘটনায় গত ৮ এপ্রিল ওয়ারী থানায় একটি মামলা করেন ভুক্তভোগী। মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ২৮ মার্চ থেকে ৭ এপ্রিলের মধ্যে যেকোনো সময় অভয় দাস লেনের একটি বাড়ির দ্বিতীয় তলার বাসায় গ্রিল কেটে ঢুকে সাড়ে ৩৩ ভরি স্বর্ণালংকার ও ৩০০ ডলার চুরি হয়। এ সময় বাসায় কেউ ছিল না। মামলার পর ডিবির ওয়ারী অঞ্চলের দল ঘটনাস্থলসহ আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তদন্ত করে চোরদের শনাক্ত করে।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন–অর–রশীদ। ঢাকা, ২ মে
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন–অর–রশীদ। ঢাকা, ২ মে
ছবি: সংগৃহীত

এরপর বাগেরহাটের মোংলা থানার পশুর নদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে চুরির মূল পরিকল্পনাকারী মো. মোবারক ওরফে মগাকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। অপরদিকে নেত্রকোনা থেকে চুরির অভিযোগে রাকিব মিয়া নামের আরেক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। চুরি করা স্বর্ণালংকার ও ডলার বিক্রির টাকা দিয়ে মোবারক ও রাকিব তাঁদের আরও আটজন বন্ধু মিলে কক্সবাজার বেড়াতে যান। আর মোবারক তাঁর এক বান্ধবীকে একটি মুঠোফোন কিনে দেন। এ ছাড়া চুরির সঙ্গে জড়িত আরও ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ২০ ভরি স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়। তাঁরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন–অর–রশীদ।

হারুন-অর-রশীদ আরও বলেন, ধানমন্ডির একটি বাসায় গ্রিল কেটে চুরির ঘটনায় গত ১৯ এপ্রিল ধানমন্ডি মডেল থানায় আরেকটি মামলা হয়। ওই বাসা থেকে ৪১ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ৩৭ লাখ টাকার মালামাল চুরি হয়। মামলাটি তদন্তের সময় ডিবির রমনা বিভাগের ধানমন্ডি দল অনুসন্ধান ও সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে। এরপর ২৬ এপ্রিল ঢাকাসহ কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় অভিযান চালিয়ে চুরির ঘটনায় জড়িত গিয়াস উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চুরি করা স্বর্ণালংকার, নগদ ৭ লাখ টাকা ও চুরিতে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি উদ্ধার করা হয়।

এ ছাড়া সিঁধেল চোরদের গ্রেপ্তারে ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে ডিবি মতিঝিল বিভাগ ১৪ জন, লালবাগ বিভাগ ৩ জন, গুলশান বিভাগ ৩ জন ও মিরপুর বিভাগ ২ জনকে গ্রেপ্তার করে।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে আজ শনিবার দুপুরে আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন মির্জা আব্বাস
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে আজ শনিবার দুপুরে আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন মির্জা আব্বাসছবি: প্রথম আলো

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না দেওয়াকে আরেকটা ফাঁদ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। বর্তমান সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ফাঁদ পেতেছিলেন, বিএনপিকে নির্বাচনে নেবেন। কিন্তু বিএনপি নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে। যে নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারবে না, সেই নির্বাচনের প্রয়োজন বাংলাদেশে নেই।’

আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে মির্জা আব্বাস এসব কথা বলেন। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশীদের মুক্তির দাবিতে এ কর্মসূচি আয়োজন করে হাবিবুর রশীদ মুক্তি পরিষদ।

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের উদ্দেশে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘একনায়কতন্ত্র কায়েম করতে পারেন, রাজতন্ত্র ঘোষণা দিতে পারেন, কিন্তু নির্বাচনের কথা আপনাদের মুখে মানায় না। ৭ জানুয়ারি কি লোকজন ভোট দিতে গিয়েছিল? এবারও (উপজেলা নির্বাচনে) যাবে না।’

উপজেলা নির্বাচনে নিজেরাই নিজেদের প্রার্থীদের দাঁড়াতে দিচ্ছে না এমন কয়েকটি ঘটনার উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বিএনপি দাঁড়ালে কী অবস্থা হতো! আমাদের সিদ্ধান্ত সঠিক আছে, সঠিক থাকবে।’

বর্তমানে ‘স্বৈরশাসন’ চলছে অভিযোগ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘জনরোষের মুখে একদিন না একদিন এই সরকারের পতন ঘটবেই। এটা কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। গ্রেপ্তার করে বিশ্বে কোনো আন্দোলন থামানো গেছে বলে জানা নেই।’

বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতা আরও বলেন, ‘আমরা আন্দোলন করছি, আন্দোলন হবে, মুক্ত হবে দেশ—আমি দেখতে পারব কি না, জানি না। কিন্তু কেউ না কেউ আসবে দেশকে মুক্ত করার জন্য। আমাদের নেতা তারেক রহমান একদিন দেশে ফেরত আসবেন। জনরোষের মুখে এই সরকারের যখন পতন হবে, তখন তিনি দেশে ফেরত আসবেন, নেতৃত্ব দেবেন দেশকে।’


আজ দেশের ‘করুণ অবস্থা’ সম্পর্কে আওয়ামী লীগ ছাড়া সবাই জানে বলে মনে করেন মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, সবচেয়ে বেশি জানেন বিএনপির নেতা–কর্মীরা। তাঁর বাসায় প্রতিদিন কমবেশি ৫০–১০০ জন আসেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কেউ বলে আমার বাবা জেলে, কেউ বলে সন্তান জেলে, কেউ বলে ভাই জেলে, কেউ বলে স্বামী জেলে।’

খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য ‘যুদ্ধ করতে করতে মৃত্যুর পথে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন’ বলে মনে করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, ‘তাঁকে মুক্তি দিয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে বলেছি। তাঁর অবস্থা ভালো নয়। তাঁরা (ক্ষমতাসীন দলের নেতারা) বলেন আইন নেই। আইন থাকবে না কেন? রাশেদ খান মেননকে বিদেশে পাঠানো হয় নাই? আ স ম আবদুর রবকে বিদেশে পাঠানো হয় নাই? আ স ম রবকে বন্দী অবস্থায় বিদেশে পাঠানো হয়েছিল।’


খালেদা জিয়া দেশের সর্বনাশ করে গেছেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তা ঠিকঠাক করছেন—ক্ষমতাসীন দলের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘কী ঠিক করছেন, জানা নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের দিকে নজর দেন, টাকাপয়সা নাই।

কয়েকজন লোকের দিকে নজর দেন, পেট বড় হয়ে গেছে। হাজার হাজার, লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে। ওই উন্নয়ন চুরির উন্নয়ন, দেশের মানুষ মেনে নেবে না।’
সরকারকে উৎখাত করা নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বক্তব্যের বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘আমরা তো সরকার দেখি না। এই সরকারকে উৎখাত করা বা রাখার দায়দায়িত্ব বিএনপি বহন করে না। জনগণ যখন মনে করবে, তখন লাঠি দিয়ে এই সরকারকে ফেলে দেবে।’

কর্মসূচিতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দলের নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ একসাথে চালাতে হবে। না হলে হাবিবুর রশীদের মতো অনেককে জেলে যেতে হবে। সুশাসন, আইনের শাসন, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে সর্বশেষ লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্যসচিব রফিকুল আলম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েম মুন্না প্রমুখ।

[random][fbig2][#e74c3c]
Powered by Blogger.