কেন্দুয়ায় সঞ্চয়পত্রের টাকা আত্মসাৎ, পোস্ট মাস্টার বরখাস্ত
নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় ডাক বিভাগের সঞ্চয়পত্রের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় কেন্দুয়া পোস্ট অফিসের ‘পোস্ট মাস্টার’ শাহেদুন্নাহারকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে ডাক কর্তৃপক্ষ। গত ৭ জুলাই কেন্দ্রীয় সার্কেলের পোস্ট মাস্টার জেনারেল মো. ফরিদ আহমেদের স্বাক্ষরিত এক আদেশে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। আদেশের পরদিন পোস্ট মাস্টার শাহেদুন্নাহারকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে তাঁর স্থলে মধুভূশন সরকার নামে একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
১০ জুলাই মোহনগঞ্জ উপ-বিভাগের পোস্ট অফিস পরিদর্শক আবু হেনা মোনাসিফ করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেছে। পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শাহেদুন্নাহার গত বছরের নভেম্বরে কেন্দুয়া উপজেলা পোস্ট অফিসে পোস্ট মাস্টার হিসেবে যোগদান করেন। এর আগে তিনি নেত্রকোনা সদর পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার পদে কর্মরত ছিলেন। বরখাস্তের আদেশে বলা হয়েছে- পোস্ট মাস্টার শাহেদুনাহার সঞ্চয়পত্রের ব্যবহৃত ও অব্যবহৃত কুপন জালিয়াতিমূলকভাবে এবং বাতিল মুনাফা কুপনে ফ্লুইড ব্যবহারের মাধ্যমে পুনঃব্যবহারে সরকারি অর্থ আত্মসাত করেন। সেইসাথে সংশ্লিষ্ট প্রমাণাদি ও সরকারি ডকুমেন্টস ঔদ্ধত্যপূর্ণভাবে ছিঁড়ে ফেলেন। এমনকি ঘটনার তদন্তকালে তদন্ত টিমের কাছে লিখিত বিবৃতি দিতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে সুষ্ঠু তদন্তকাজে অসহযোগিতা ও ব্যাঘাত সৃষ্টি করেন।
অসদাচরণ ও আত্মসাতের ঘটনা প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় সরকারি কর্মচারি (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩ (খ), ধারা ৩৯ (১) ও বিধি ১২(১) অনুযায়ী শাহেদুন্নাহারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ডাক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পোস্ট মাস্টার শাহেদুন্নাহার গত বছরের নভেম্বরে নেত্রকোনা সদর থেকে কেন্দুয়া উপজেলা পোস্ট অফিসে যোগদান করেন। তবে বদলি হওয়ায় সময় সদর অফিস থেকে এক নারীর পুরোনো সঞ্চয়পত্রের কুপন সাথে নিয়ে যান। যে সঞ্চয়পত্রের টাকা ২০১৭ সালেই ওই নারী তুলে নিয়েছেন। কেন্দুয়ায় গিয়ে ওই ভাঙানো সঞ্চয়পত্রে থাকা লাল কালি দ্বারা ক্রস চিহ্ন ফ্লুইড দিয়ে মুছে ফেলেন শাহেদুন্নাহার। পরে পুনরায় সেই সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে ৫ লাখ টাকা তুলে আত্মসাত করেন তিনি। সেই সাথে সংশ্লিষ্ট সকল প্রমাণাদি তিনি ছিঁড়ে ফেলেন। বিষয়টি ডাক বিভাগের নজরে এলে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ।
ময়মনসিংহ ডাক বিভাগের সুপারিন্টেন্ডেন্ট রিপন রায়কে প্রধান করে তিন সদস্য তদন্ত কমিটি করা হয়। এ কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন- ময়মনসিংহ ডাক বিভাগের পরিদর্শক পলাশ চন্দ্র ধর ও মোহনগঞ্জ উপ-বিভাগের পোস্ট অফিস পরিদর্শক আবু হেনা মোনাসেফ করিম। এদিকে তদন্তকালে কমিটির সদস্যদের সাথে অসদাচরণ করেন শাহেদুন্নাহার। ওই কমিটি তদন্ত করে প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পায়। তাদের প্রতিবেদন পেয়ে কেন্দ্রীয় সার্কেলের পোস্ট মাস্টার জেনারেল মো. ফরিদ আহমেদ অভিযুক্ত পোস্ট মাস্টার শাহেদুন্নাহারকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। এ বিষয়ে জানতে বরখাস্তকৃত পোস্ট মাস্টার শাহেদুন্নাহারকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ না করে কেটে দেন।